ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্ক
যুগ, ক্রেজ আর অনুপ্রেরণার সমাপ্তি ঘটলো। ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডস্ট্রির বড় একটা অংশ ফাঁকা করে চলে গেছেন কীর্তিমান অভিনেতা শশী কাপুর।
তার চলে যাওয়ার মাধ্যমে একটা প্রজন্মের জ¦লজ¦লে স্মৃতি যেন ফিকে হয়ে গেলো। ‘আগ’, ‘সঙ্গম’ আর ‘আওয়ারা’ চলচ্চিত্রে শিশু শিল্পী হিসেবে আবির্ভাস ঘটেছিল তার। পরবর্তিতে ছয় দশকের ক্যারিয়ারে ইন্দ্রজালে জড়িয়ে রেখেছিলেন সবাইকে। শুধু ভারতেই নয়, বাংলাদেশের তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল।
ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতকে যুগে যুগে যেসব ছবি পুষ্ট করে রেখেছিল, তার অনেকগুলো উপহার দিয়েছিলেন এই খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী। তার কিছু ছবি সব সময়ের জন্যে চলচ্চিত্র জগতের সম্পদ হয়ে থাকবে। এগুলো কেবল সুপারহিট মুভি হিসেবেই নয়, বহু পরিচালককে গুণগত মানসম্পন্ন ছবি বানাতে উৎসাহ জুগিয়েছে। এখানে তার এমনই কিছু সিনেমার তালিকা দেখে নিন।
১. জাব জাব ফুল খিলে : ১৯৮৫ সালের এক রোমান্টিক ড্রামা।
ব্লকবাস্টার ছবি ছিল। ওই বছর ইন্ডিয়ান বক্স অফিসের টপ টেন সেরা আয়ের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ছবিটি। শশীর সঙ্গে ছিলেন নন্দা। দারুণ এক প্রেমকাহিনী উপহার দিয়েছিলেন শশী এই ছবির মাধ্যমে।
২. দিওয়ার : আইকনিক ডায়ালগ ছাড়াও ভিন্ন ঘরানার ছবি হিসেবে মুক্তি পায় ১৯৭৫ সালে। অমিতাব বচ্চন ছিলেন ছবিতে। প্রতারণা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দুই ভাইয়ের কাহিনি নাড়া দিয়েছিল দর্শকদের।
৩. জুনুন : ১৯৭৮ সালের এই ছবিটি ভারতের ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় বেস্ট ফিচার ফিল্ম ক্যাটাগরিতে।
৪. কালইয়ুগ : ১৯৮১ সালের ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন রেখা, রাজ বাব্বর। এ সিনেমাকে মহাভারতের আধুনিক সংস্করণ বলা হতো। বাণিজ্যের দুনিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতার অনবদ্য এক কাহিনী।
৫. চোর মাচায়ে শোর : ১৯৭৪ সালের সুপারহিট মুভি। এটাতেই ছিল জনপ্রিয় ‘লে জায়েঙ্গে লে জায়েঙ্গ’ গানটি। এই গান বলিউডের আরেক ব্লকবাস্টার ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবির নামকরণে উদ্বুদ্ধ করে।
৬. সত্যম শিবম সুন্দরম : আরেক আইকনিক মুভি। দৈহিক ও আত্মিক ভালোবাসার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তা ফুটে উঠেছে হিট মুভিটিতে। এতে জিনাত আমান অভিনয় করেছিলেন।
৭. ত্রিশুল : ১৯৭৮ সালের এ মুভির কাহিনি লিখেছিলেন সালিম-জাভেদ। পরিচালনায় ছিলেন ইয়াশ চোপড়া। শশীর পাশাপাশি ছিলেন অমিতাভ আর সঞ্জিব কুমার।
৮. সুহাগ : শশী, অমিতাব, রেখা এবং পারভিন ববি অভিনীত দারুণ এক ছবি। ১৯৭৯ সালের বক্স অফিসে সাফল্য বয়ে আনে সিনেমাটি। পরে তেলেগুতে পুননির্মাণ করা হয়।
৯. শান : অ্যাকশন থ্রিলার ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৮০ সালে। এটা শোলের মতো হিট হতে পারেনি। কিন্তু দর্শকদের হৃদয় জয় করেছিল। এতে ছিলেন অমিতাব এবং সুনীল দত্ত।
১০. ধর্মপুত্র : ১৯৬১ সালের আরেক ছবি। পরিচালনায় ছিলেন ইয়াশ চোপড়া। শশীর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মালা সিনহা এবং রেহমান। ধর্মীয় গোঁড়ামি আর সাম্প্রদায়িকতাকে উপজীব্য করে নির্মাণ করা হয় অসাধারণ ছবিটি।
আরো অনেক চমৎকার ছবি রয়েছে শশীর ঝুলিতে। তার জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৮ মার্চ। ১৯৬১ সালে ‘ধর্মপুত্র’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন তিনি। অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুরের সুযোগ্য ছেলে। তার পুরো নাম বলবীর রাজ কাপুর। ষাট ও সত্তরের দশকে বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতাও ধরা হয়ে থাকে তাকে। অভিনয়ে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য ২০১১ সালে শশী কাপুরকে পদ্মভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয়। এই তারকা ১৯৮৮ সালে একটি রাশিয়ান ছবি পরিচালনা করেন।